কলকাতা, ৬ জুন (পিটিআই)
তৃণমূল কংগ্রেসের পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী বিতর্কে জড়িয়েছেন, কারণ তিনি অপারেশন সিঁদুরকে “বিজেপির শুরু করা যুদ্ধোন্মাদনার খেলা ছাড়া আর কিছু নয়” বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে দেশপ্রেমিক মানুষের, বিশেষত মহিলাদের, আবেগ নিয়ে খেলা করার অভিযোগও তোলেন।
এই মন্তব্যের পর বিজেপির সংখ্যালঘু সেলের এক নেতা চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে কুলটি থানায় এফআইআর করেন এবং অভিযোগ করেন, তৃণমূল বিধায়ক সশস্ত্র বাহিনীর বীরত্বকে খাটো করেছেন।
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা ও বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী এনআইএ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন, চক্রবর্তীর কোনো দেশবিরোধী শক্তির সঙ্গে যোগ আছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে।
তৃণমূলের সিনিয়র নেত্রী ও রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, চক্রবর্তীর মন্তব্য তাঁর ব্যক্তিগত এবং দল এই মন্তব্যের সমর্থন করে না।
এক ভাইরাল ভিডিওতে চক্রবর্তীকে বলতে শোনা যায়, “ওরা (বিজেপি) যেভাবে এই সিঁদুর খেলা শুরু করেছে, তাতে মনে হচ্ছে গোটা ঘটনাটা সাজানো নাটক। বিজেপির এই যুদ্ধোন্মাদনা আসলে একটা খেলা ছাড়া কিছুই নয়। অপারেশন সিঁদুরে প্রধানমন্ত্রী মোদী দেশপ্রেমিক মানুষের, বিশেষত মহিলাদের, আবেগ নিয়ে খেলেছেন।”
চক্রবর্তী দাবি করেছেন, তাঁর বক্তব্য “রাজনৈতিক স্বার্থে বিকৃত ও ভুলভাবে উপস্থাপন” করা হয়েছে এবং তিনি ভারতীয় সেনা ও পাকিস্তানে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের প্রতি যথেষ্ট শ্রদ্ধাশীল।
তিনি আরও বলেন, “আমি আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী, বিশেষত ভারতীয় সেনার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা রাখি। পাকিস্তান-প্রেরিত সন্ত্রাসের আমি চিরকাল বিরোধী এবং আমাদের বাহিনী যেভাবে সীমান্ত পাহারা দেয়, তার সমর্থক।”
বিজেপি রাজ্য সভাপতি ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার বলেন, “তৃণমূল নেতারা সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্ক তোষণের চেষ্টা করছেন। ধর্ম নির্বিশেষে সব দেশপ্রেমিক ভারতবাসী সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে এবং অপারেশন সিঁদুরে দেশের পাশে ও সেনাবাহিনীর পাশে রয়েছেন।”
চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য আরও বলেন, “চক্রবর্তীর মন্তব্য ব্যক্তিগত, দল এর সমর্থন করে না। আমাদের চেয়ারপার্সন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও জাতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে দলের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন এবং অপারেশন সিঁদুরে আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছেন। এই বিষয়ে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ।”
উল্লেখ্য, অপারেশন সিঁদুর ছিল ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পাহেলগাঁও হামলার (যেখানে ২৬ জন, বেশিরভাগ পর্যটক, নিহত হন) পর পাকিস্তানে সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটিতে ভারতের পাল্টা অভিযান।