‘রাজ খোসলা ছিলেন অবজ্ঞাত, প্রশংসিত নন’: জন্মশতবর্ষে মেন্টরকে স্মরণ করলেন মহেশ ভাট

0
10

মুম্বই, ৩১ মে (PTI): প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা মহেশ ভাট বলেছেন, তাঁর মেন্টর রাজ খোসলা কখনও কারও স্বীকৃতি বা বাহবা চাননি, আর সেই কারণেই তিনি হিন্দি সিনেমার ইতিহাসে অন্যতম অবমূল্যায়িত পরিচালক হয়ে রয়েছেন।

শনিবার রাজ খোসলার জন্মশতবর্ষে ভাট তাঁকে স্মরণ করলেন এক শান্ত, গল্প বলার প্রতি নিবেদিতপ্রাণ মানুষ হিসেবে।
ভাট বলেন, “রাজ খোসলা নিঃসন্দেহে ভারতীয় সিনেমার মহানদের মধ্যে অন্যতম উজ্জ্বল আইকন নন। কিন্তু এর কারণ, তিনি নিজেই একদিন আমাকে বলেছিলেন—‘আমি সিনেমা ভালোবাসি, ইন্ডাস্ট্রি ভালোবাসি।’ তিনি কখনও নিজের প্রচার বা স্বীকৃতির জন্য লড়েননি, বরং নিজের কাছে নিজেকে প্রমাণ করাই ছিল তাঁর লক্ষ্য… তিনি সম্ভবত ৭০-এর দশকের সবচেয়ে অবমূল্যায়িত পরিচালক।”

‘মেরা গাঁও মেরা দেশ’ ও ‘দো রাস্তা’র মতো ছবিতে রাজ খোসলার সহকারী ছিলেন মহেশ ভাট।
রাজ খোসলার উল্লেখযোগ্য ছবিগুলির মধ্যে রয়েছে—‘C.I.D.’ (১৯৫৬), ‘ওহ কৌন থি?’ (১৯৬৪), ‘মেরা সায়া’ (১৯৬৬), ‘মেরা গাঁও মেরা দেশ’ (১৯৭১), এবং ‘দোস্তানা’ (১৯৮০)।

তাঁর ছবিগুলির অনন্য বৈশিষ্ট্য ছিল অসাধারণ সংগীত, যেগুলির গান আজও জনপ্রিয়।
ভাট বলেন, তিনিও নিজের ছবিতে (যেমন ‘আশিকি’, ‘দিল হ্যায় কি মানতা নেহি’, ‘জখম’) সেই সংগীতের গুরুত্ব বজায় রেখেছেন।
তিনি বলেন, “আমরা ছোটবেলায় প্রচুর আমেরিকান সিনেমা দেখতাম, তখন গানকে বাস্তবতার বাইরে মনে হত। খোসলা আমাদের বলতেন—‘এই দেশে যদি গান না থাকে, সিনেমা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছাবে না। তারা-ই তোমার ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করে।’ তিনি বলতেন, ‘রাস্তার মানুষ যদি তোমার গান না গায়, তোমার ভবিষ্যৎ নেই।’ তাই তিনি ছবিতে ভালো গান রাখার জন্য জোর দিতেন, তার জন্য আলাদা পরিস্থিতি তৈরি করতেন। এটাই আমার মধ্যে থেকে গেছে—আমি ছবিতে গান বুনে দিতাম।”

‘ওহ কৌন থি?’-র ‘লাগ যা গলে’ গানটির উদাহরণ দিয়ে ভাট বলেন, “এমন গান আর হয়নি, যা লতা মঙ্গেশকরের কণ্ঠে এতটা আবেগে ভরা। গান বা সিনেমা হৃদয় থেকে তৈরি হয়, তারা সময়ের সঙ্গে বাঁচে না, হৃদয়ে বাঁচে।”

তিনি আরও বলেন, “আজকের ডিজিটাল যুগে সিনেমা মুক্তির পরই ভুলে যাওয়া হয়। তখনকার দিনে মিডিয়ার উপস্থিতি ছিল না, আর এখন ডিজিটাল যুগে স্মৃতি আরও কমে গেছে। তাই অবাক হই না, অনেকেই জানে না খোসলা কেমন পরিচালক ছিলেন—তিনি পারিবারিক নাটক, ডাকাত গল্প, ক্রাইম, সেমি-হরর—সব ধরনের ছবি করেছেন।”

বর্তমান প্রজন্মকে ভাট আহ্বান জানান, “আজ আমরা যে জল পান করি, তা তাঁদের মতো মানুষদের কূপ খননের ফল। আমাদের সিনেমার ঐতিহ্য ভুলে গেলে চলবে না।”

ভাট আরও বলেন, খোসলা ছিলেন অত্যন্ত মার্জিত ও শিক্ষিত ব্যক্তিত্ব।
খোসলার জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে ফিল্ম হেরিটেজ ফাউন্ডেশন (FHF) মুম্বইয়ের রিগ্যাল সিনেমায় ‘রাজ খোসলা ১০০ – বম্বাই কা বাবু’ শিরোনামে একদিনের রেট্রোস্পেকটিভের আয়োজন করেছে, যেখানে দেখানো হচ্ছে তাঁর তিনটি উল্লেখযোগ্য ছবি—‘C.I.D.’ (১৯৫৬), ‘বম্বাই কা বাবু’ (১৯৬০), এবং ‘মেরা গাঁও মেরা দেশ’ (১৯৭১)।

ভাট বলেন, “খোসলার ছবিগুলোর পুনরুদ্ধার মানুষের জন্য সহজলভ্য হবে—এটা খুবই ভালো উদ্যোগ। এটা শুধু বিশেষজ্ঞদের জন্য নয়, সাধারণ দর্শকের জন্যও। এটাই সবচেয়ে বড় কথা।”

ভাট স্মরণ করেন, ৮০-৯০ দশকে যখন তিনি খোসলার সঙ্গে দেখা করেন, তখন খোসলা তাঁর সাফল্যে খুশি ছিলেন, আবার নিজেও সাফল্যের জন্য আকুল ছিলেন।
খোসলা ১৯৯১ সালে মুম্বইয়ে মারা যান।

ভাট বলেন, “৮০-র দশকে আমি যখন তাঁর সঙ্গে দেখা করি, তিনি বলেছিলেন, ‘এই সাফল্যের ঢেউয়ে চড়ার অনুভূতি কেমন?’ তখন তাঁর ক্যারিয়ার পড়তির দিকে। আমি বলেছিলাম, ‘স্যার, এটা আমি চাইনি।’ তিনি বলেছিলেন, ‘চুপ করো, উপভোগ করো, এত সহজে হিট পাওয়া যায় না। আমাকে জিজ্ঞেস করো, আমি তো এখন হিট পাচ্ছি না।’” PTI KKP RB BK RB RB

Category: Breaking News

SEO Tags: #swadesi, #News, ‘Raj Khosla was unsung, not applauded’: Mahesh Bhatt remembers his mentor on birth centenary

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here